ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে আসামির জামিন মঞ্জুর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সহকারী বাইন্ডার মোস্তফা আসিফ অর্ণবকে জামিন দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহবুব এ আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার এসআই তৌফিক হাসান আসামিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করলেও আদালত জামিন মঞ্জুর করেন। পরে বিকেলে মুক্তি পান মোস্তফা আসিফ। আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদী (ভুক্তভোগী ছাত্রী) মামলা প্রত্যাহারের জন্য থানায় আবেদন করায় আদালত জামিন মঞ্জুর করেছেন।
ঘটনাটি ঘটে গত ৫ মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই নারী শিক্ষার্থী এবং তাঁর এক বন্ধু শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে পায়ে হেঁটে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন। রাজু ভাস্কর্যের সামনে পৌঁছালে মোস্তফা আসিফ ছাত্রীটির সামনে এসে তাঁর পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। তিনি ছাত্রীটিকে প্রশ্ন করেন, “আপনি পর্দা করেননি কেন?” এবং “ওড়না ঠিক নেই কেন?” এ সময় তিনি ছাত্রীটিকে যৌন হয়রানি করেন। ভুক্তভোগী প্রক্টর অফিসে ফোন করতে চাইলে মোস্তফা আসিফ দৌড়ে পালিয়ে যান।
ঘটনার পর ওই ছাত্রীটি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন এবং বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করে আসামির শাস্তির দাবি জানান। পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেন। প্রক্টর অফিসের মাধ্যমে মোস্তফা আসিফকে শনাক্ত করে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। গত বুধবার (৫ মার্চ) সন্ধ্যায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, “ছাত্রীটি প্রথমে ফেসবুকে ঘটনাটি প্রকাশ করেন এবং পরে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেন। অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রক্টর অফিসে আনা হলে তিনি তাঁর অপরাধ স্বীকার করেন। পরে তাকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়।”
মামলার বাদী ছাত্রীটি মামলা প্রত্যাহারের জন্য থানায় লিখিত আবেদন দাখিল করেন।
এ বিষয়ে আদালত সূত্রে জানা গেছে, বাদীর মামলা প্রত্যাহারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আসামিকে জামিন দেন।
মোস্তফা আসিফের মুক্তির দাবিতে শাহবাগ থানার সামনে একদল ব্যক্তি অবস্থান নিয়েছিলেন। তারা নিজেদের ‘তৌহিদি জনতা’ হিসেবে পরিচয় দেন এবং আসামির মুক্তির দাবি জানান।
এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সমাজ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা অভিযুক্তের দ্রুত বিচার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।