হোটেলে নারী চিকিৎসকের গলাকাটা লাশ, ‘প্রেমিক’ গ্রেফতার
রাজধানীর পান্থপথের একটি আবাসিক হোটেল থেকে এক নারী চিকিৎসকের গলাকাটা লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তার ‘প্রেমিক’ রেজাউল করিম রেজাকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম মহানগরী থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে গতকাল (বুধবার) রাতে পান্থপথের ফ্যামিলি সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট নামের আবাসিক হোটেল থেকে নারী চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দীকের (২৭) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
তিনি রাজধানীর মগবাজার কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস পাশ করেন। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গাইনি বিষয়ের একটি কোর্সে অধ্যয়নরত ছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার সকালে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে রেজাউলের সঙ্গে আবাসিক হোটেলটির চতুর্থ তলার পশ্চিম পাশের ৩০৫নং কক্ষে উঠেছিলেন জান্নাতুল। তাদের মধ্যে ‘প্রেমের সম্পর্ক ছিল’ বলে জান্নাতুলের পরিবার থেকে জানা গেছে। দুপুরের দিকে ওই যুবক হোটেল কক্ষে তালা মেরে চলে যান।
পরে হোটেল ম্যানেজার ওই যুবককে ফোন করলে তিনি বলেন, ‘ও (জান্নাতুল) ঘুমাচ্ছে। আমি আসছি’। বিকালে আবার কল করলে তার ফোন বন্ধ পান ম্যানেজার। ওই যুবক আর না আসায় রাতে ম্যানেজার বিষয়টি পুলিশকে জানান।
এরপর পুলিশ গিয়ে কক্ষটির বিছানা থেকে জান্নাতুলের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
এ ঘটনার পর স্বামী পরিচয় দেওয়া রেজাউল পালিয়ে যান। উদ্ধারের সময়ে শরীরে একাধিক জখমের দাগ ছিল।
এ ঘটনায় জান্নাতুলের বাবা একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় রেজাউলকে আসামি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কলাবাগান থানা পুলিশ। সেখানে ঘটনার সম্ভাব্য সময় হিসেবে সকাল ৮টা থেকে সকাল সাড়ে ১১টাকে উল্লেখ করা হয়েছে।
পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রেমের সম্পর্ক থেকে বিয়ে নিয়ে তাদের মধ্যে টানাপোড়েন চলছিল। রেজাউল একটি বেসরকারি ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা। তার সঙ্গে মেয়ের বিয়েতে সম্মতি ছিল না জান্নাতুলের পরিবারের।
এটি নিয়ে ক্ষুব্ধ হতে পারেন রেজাউল। আর তা থেকেইে তিনি এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কলাবাগান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু জাফর মোহাম্মদ মাহফুজুল কবির মামলাটির তদন্ত করছেন। তিনি বলেন, আমরা এই মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে কাজ করছি।
ময়নাতদন্তের জন্য জান্নাতুলের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার শরীরে একাধিক দাগ রয়েছে। আসামি রেজাউলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে হত্যার উদ্দেশ্য সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।