বিয়ের ৮ ঘণ্টা আগে হঠাৎ পঙ্গু কনে, থামেনি বিয়ে
বিয়ের ৮ ঘণ্টা আগে দুর্ঘটনায় পঙ্গু হয়ে যাওয়া স্ত্রীকে স্ট্রেচারে শুয়ে থাকা অবস্থাতেই বিয়ে করেছেন ভারতের উত্তর প্রদেশের প্রতাপগড়ের এক যুবক।
প্রতাপগড়ের কুন্ডা এলাকার বাসিন্দা আরতি মৌর্যের বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হয়েছিল পাশের গ্রামের অবধেশের সঙ্গে। চলতি মাসের ৮ তারিখ তাদের বিয়ের কথা ছিল।কিন্তু ওইদিন বেলা একটা নাগাদ একটি শিশুকে বাঁচানোর
চেষ্টা করে ছাদ থেকে পড়ে যান আরতি। ভেঙে টুকরো হয়ে যায় তার শিরদাঁড়া। কোমর, পাসহ শরীরের অন্যান্য অঙ্গপ্রতঙ্গও ভয়াবহ চোট পায়।
এতে করে সানাইয়ের শব্দ ডুবে যায় কান্নায়, আরতিকে ভর্তি করা হয় স্থানীয় এক হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানান, আরতি পঙ্গু হয়ে গেছেন, বেশ কয়েক মাস বিছানা থেকে নড়তে পারবেন না।
এমনকি চিকিৎসার পরেও তার পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা কম। এই পরিস্থিতিতে বিয়ে ভেঙে যাবে ভেবে আরতির বাড়ির লোকেরা তার বোনকে বিয়ে করার জন্য অবধেশের কাছে প্রস্তাব দেন।
কিন্তু তিনি এতে সায় না দিয়ে সাধারণ পরিবারের অতি সাধারণ চেহারার এই যুবক চলে যান হাসপাতালে, ভাবী স্ত্রীর পরিচর্যায় হাত লাগান তিনি।
অবধেশ জানিয়ে দেন, তিনি আরতিকেই বিয়ে করবেন। বিয়ের যে লগ্ন ঠিক ছিল, সে সময়েই হবে অনুষ্ঠান। যদি হাসপাতালে গিয়ে অক্সিজেনের সাহায্যে শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়া আরতিকেই বিয়ে করতে হয়, তাহলেও পিছপা হবেন না তিনি।
তার জেদে চিকিৎসকরা ঘণ্টাদুয়েক পর অ্যাম্বুলেন্সে আরতিকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। আরতি তখন স্ট্রেচারে শুয়ে, অক্সিজেন, স্যালাইন চলছে।
সেই অবস্থাতেই তাকে সিঁদুর পরান অবধেশ। হয় যাবতীয় অনুষ্ঠান। শুধু শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার বদলে আরতিকে আবার নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে।
পরের দিন তার অপারেশন হওয়ার কথা ছিল, ফর্মে সই করেন অবধেশ। বিয়ের পর এক সপ্তাহের বেশি কেটে গেলেও হাসপাতালে স্ত্রীর পাশ থেকে সরেননি অবধেশ।
স্ত্রীর সেবা করে চলেছেন তিনি, দ্রুত সেরে ওঠার আশ্বাস দিচ্ছেন। চিকিৎসকরা বলেছেন, এখনও অন্তত দুই সপ্তাহ আরতিকে হাসপাতালে থাকতে হবে, আগামী বেশ কয়েক মাস বিছানা ছেড়ে উঠতে পারবেন না।
কিন্তু কোনও কষ্টই গায়ে লাগছে না আরতির। স্বামীর হাত শক্ত করে ধরে জীবনের এই তিক্ত-মধুর সময় হাসিমুখে কাটিয়ে দিচ্ছেন তিনি। সূত্র: এবিপি আনন্দ।