ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি স্থগিত, যুদ্ধবিরতি চুক্তির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘পরবর্তী পর্যায়ের জিম্মি হস্তান্তর নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে না।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘হামাস আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন করছে এবং জিম্মি মুক্তিকে অপমানজনক প্রচারের অংশ হিসেবে ব্যবহার করছে।’
গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্বের শর্ত অনুযায়ী, হামাস ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে, বিনিময়ে ১,৯০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রথম পর্বের শেষ ধাপে ছয়জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার পরও ইসরায়েল ৬২০ বন্দির মুক্তি স্থগিত করে, যা চুক্তির ভবিষ্যৎকে আরও অনিশ্চিত করে তুলেছে।
হামাসের মুখপাত্র আবদেল লতিফ আল-কানৌ এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘ইসরায়েল চুক্তি লঙ্ঘন করেছে এবং এটি একটি অযৌক্তিক বিলম্ব।’ তিনি আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে মধ্যস্থতাকারী দেশ মিশর ও কাতারকে অবহিত করা হয়েছে।
ইসরায়েলের অভিযোগ, হামাস জিম্মিদের মুক্তির সময় তাদের জনসমক্ষে হাজির করে, তাদের দিয়ে বক্তব্য দিতে বাধ্য করে এবং মৃত জিম্মিদের কফিন জনসমক্ষে বহন করে, যা ‘অপমানজনক’। তবে হামাস এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অধিকাংশ জীবিত জিম্মি মুক্তি পাওয়ার পর ইসরায়েল গাজায় আবারও সামরিক অভিযান শুরু করতে পারে। নেতানিয়াহুর কৌশলগত পরিকল্পনা অনুযায়ী, দ্বিতীয় পর্যায়ের যুদ্ধবিরতির বিষয়ে তিনি অনাগ্রহী। ফলে গাজায় নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এই স্থগিতাদেশের ফলে কেবল যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎই নয়, বরং ফিলিস্তিনি বন্দিদের পরিবারের জন্য নতুন অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই পরিস্থিতির প্রতি গভীর নজর রাখছে এবং সংকট নিরসনে মধ্যস্থতাকারীদের ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।