পুতিনকে গ্রেফতার না করায় মঙ্গোলিয়ার সমালোচনা
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেফতারি পরোয়ানার মধ্যেই মঙ্গোলিয়ায় গেলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। মঙ্গলবার দেশটির রাজধানী উলানবাটারে পৌঁছেছেন তিনি।
গত বছর ১৭ মার্চ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর এই প্রথম আইসিসির কোনো সদস্য দেশ সফরে গেলেন পুতিন। আইসিসির সদস্য হওয়ার পরও মঙ্গোলিয়া এই পরোয়ানা কার্যকর না করায় সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে।তিনকে গ্রেফতার করতে মঙ্গোলিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আইসিসি, ইউক্রেন, পশ্চিমা কয়েকটি দেশ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। কিন্তু রাজধানী উলানবাটোর পৌঁছালে পুতিনকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানায় মঙ্গোলিয়া।
সাধারণত রোম চুক্তি অনুযায়ী, যাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে তারা আইসিসির সদস্য যেকোনো রাষ্ট্রে পা রাখলে গ্রেফতারের শঙ্কা রয়েছে। তবে আদালত কোনো দেশকে এ বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করতে পারেন না। আইসিসির সদস্য হওয়া সত্বেও উলানবাটোর পুতিনকে গ্রেফতারের আদেশ পালন না করলেও আদালতের তেমন কিছু করার নেই।
আইন অনুযায়ী, আইসিসির সদস্য হিসেবে মঙ্গোলিয়ার উচিত ছিল পুতিনকে গ্রেফতার করা। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ইউক্রেনের আহ্বান সত্ত্বেও মঙ্গোলিয়া এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এখনও পর্যন্ত মঙ্গোলিয়া পুতিনকে গ্রেফতারের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এ বিষয়ে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মঙ্গোলিয়া এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে দেশটির বিরুদ্ধে আইসিসি আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে।
আইন গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ গবেষক তামাস হফম্যান পলিটিকোকে বলেন, সহযোগিতার দায়িত্ব লঙ্ঘনের জন্য মঙ্গোলিয়াকে আইসিসি অবশ্যই অভিযুক্ত করবে। এরপর আইসিসি সম্মেলনে এই বিষয়টি উত্থাপন করতে পারে, যেখানে মঙ্গোলিয়ার এই লঙ্ঘনের নিন্দা জানানো হতে পারে। তবে এর ফলে কোনো গুরুতর পরিণতি। তবে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সম্ভাবনা খুব কম।
সফরকালে পুতিনকে গ্রেফতার করার জন্য মঙ্গোলিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেনও। তবে মঙ্গোলিয়া কখনোই রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়নি। রুশ অভিযানের সমালোচনা থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি মস্কোর বিরুদ্ধে জাতিসংঘে ভোটদানেও বিরত ছিল।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মঙ্গোলিয়ার নির্বাহী পরিচালক আলতানতুয়া বাতদোরজ বলেছেন, ‘পুতিন একজন অপরাধী। আইসিসির কোনো সদস্য দেশে নিরাপদে সফর করতে পারলে তার আগ্রাসী মনোভাব আরও বৃদ্ধি পাবে।’
পুতিনের একজন মুখপাত্র গত সপ্তাহে জানিয়েছেন, সফরকালে রুশ প্রেসিডেন্টকে গ্রেফতারের ভয়ে থাকতে হবে বলে মনে করে না ক্রেমলিন। কারণ সোভিয়েতের পতনের পর থেকে মঙ্গোলিয়া বেইজিং ও মস্কোর সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলেছে।