সাবেক ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে সাবেক ছাত্রদল নেতার বসতঘর ভাঙচুর
ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ হাদিসুর রহমান মিলনের নেতৃত্বে জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক এনামুল হক সাজুর বসতঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের ডাক্তারপট্টি এলাকায় এ হামলা ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে হামলাকারীরা আত্মগোপন করে।
এনামুল হক সাজুর পরিবারের অভিযোগ, ঝালকাঠি শহরের ডাক্তারপট্টি এলাকার আলী হায়দার মিয়ার কাছ থেকে বছর দেড়েক আগে তিন শতাংশের একটু বেশি জমি ক্রয় করেন জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক এনামুল হক সাজু।
ওই জমির ওপর বসতঘরে তারা ভাড়াটিয়া হিসেবে গত ৩০ বছর যাবত বসবাস করে আসছেন। জমিটি কেনার জন্য জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ হাদিসুর রহমান মিলন একাধিকবার প্রস্তুাব দেন সাজুর কাছে; কিন্তু সাজুরা জমিটি বিক্রি করতে রাজি হননি। পরে বেশ কয়েকবার জমিটি দখলের চেষ্টা চালায় সৈয়দ হাদিসুর রহমান মিলন।
বিষয়টি টের পেয়ে গত ১৯ অক্টোবর ঝালকাঠির সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা করে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির আদেশ পান এনামুল হক সাজু।
আদালতের নির্দেশ অমান্য করে সৈয়দ হাদিসুর রহমান মিলন লোকজন নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে হামলা চালিয়ে বসতঘর দখলের চেষ্টা চালায়।
এ সময় বসতঘরের অর্ধেক ভেঙে ফেলা হয়। খবর পেয়ে ঝালকাঠি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে হামলাকারীরা পাশের সৈয়দ টাওয়ারে আত্মগোপন করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা দেড়টার দিকে শাবল, লাঠিসোটা ও লোহার রড নিয়ে ২০-২৫ জনের একদল যুবক এনামুল হক সাজুদের বসতঘরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়।
একটি সীমানা প্রাচীর ছিল সেটাও ভেঙে ফেলে। জমি নিয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞাও মানেনি হামলাকারীরা। আধঘণ্টার তাণ্ডবে পুরো এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
প্রত্যক্ষদর্শী হাসান মাহমুদ বলেন, সৈয়দ মিলন কিছু দিন আগে আমার শাশুড়ির জমি দখল করেছেন। এর আগে একজন মুক্তিযোদ্ধার জমি দখল করেছেন।
এভাবে একের পর এক জমি দখল করে যাচ্ছেন, তবুও তাকে কেউ কিছু বলছেন না। এ ব্যাপারে ঝালকাঠির অভিভাবক সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমুর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।
জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক এনামুল হক সাজু অভিযোগ করেন, আমরা ডাক্তারপট্টির বসতঘরে প্রায় ৩০ বছর ধরে বসবাস করছি। আলী হায়দার মিয়ার কাছ থেকে তিন শতাংশের একটু বেশি জমি কিনে ভোগদখলে আছি।
সৈয়দ হাদিসুর রহমান মিলন ওই জমি আমাদের কাছ থেকে কেনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আমরা বিক্রি না করায় ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে আমাদের বসতঘর ভাঙচুর করেছেন। আমরা পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে সৈয়দ হাদিসুর রহমান মিলন বলেন, ওখানে এনামুল হক সাজু বা তার পরিবারের কারো কোনো জমি নেই। তারা গত ৩০-৩৫ বছর যাবত ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছেন।
আমি ওই জমি ক্রয় করার পর এখন হঠাৎ করে একটা ভুয়া দলিল বের করছে। কে বৈধ মালিক তা আদালতে ফয়সালা হবে।
ঝালকাঠি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন সরকার বলেন, জমি নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। হামলা ভাঙচুরের পর পুলিশ গিয়ে উভয়পক্ষকে শান্ত থাকতে বলা হয়েছে। ভাঙচুরের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।