তিস্তায় কী পানি আছে যে দেবে? কেন্দ্রকে প্রশ্ন মমতার
ফারাক্কা চুক্তির নবায়ন, তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের উদ্যোগের তীব্র সমালোচনা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
তিনি বলেছেন, ‘কেন্দ্র আবার বলছে তিস্তার পানি দেবে। তিস্তায় পানি কোথায়?
এরপর পানি দিলে রাজ্যের উত্তরাংশ তো খাওয়ার পানিই পাবে না। বর্ষার পানি দেখে নদীতে পানির কথা ভাববেন না। সিকিম এই ভুল করেছে।’
সোমবার কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় নবান্নে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের সঙ্গে মোদি সরকারের তিস্তা চুক্তির উদ্যোগের প্রেক্ষিতে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক নয়াদিল্লি সফরের সময় দুদেশের মধ্যে ফের তিস্তা চুক্তি নিয়ে কথা হয়েছে।
ফারাক্কা চুক্তির নবায়ন নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে সোমবার কলকাতায় সরাসরি তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে নিজের মতামত জানিয়ে দেন মমতা।
ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ফারাক্কা চুক্তির নবায়ন নিয়ে দিন কয়েক আগেও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।
সোমবারও নাম উল্লেখ না করে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন মমতা।
তিনি বলেন, ‘আমাদের না জানিয়ে ফারাক্কা চুক্তি রিনিউ করবে। ফারাক্কায় ড্রেজিং করা হয় না। যার ফলে শুধু বাংলা নয়, বিহারও বন্যায় ভাসে।
তবে মূল পার্টি আমরাই। তাও ভারত ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে যে আলোচনা হলো, সেখানে আমাদের ডাকা হলো না। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’
তিস্তার পানি বাংলাদেশকে দেওয়া নিয়ে কেন্দ্রে আলোচনা চলছে বলেও তিনি দাবি করেন। মমতা কটাক্ষ করে বলেন, ‘সিকিম যখন জলবিদ্যুৎকেন্দ্র করল, কেন্দ্রের দেখা উচিত ছিল। সেজন্য আজ মানুষকে ভুগতে হচ্ছে।’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মমতার খুবই সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। শেখ হাসিনা কলকাতা এলে বা মমতা ঢাকায় গেলে, দুজনের মধ্যে যে উষ্ণতার সম্পর্ক দেখা যায়, সেটার বিন্দুমাত্র প্রভাব তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তিতে দেখা যাচ্ছে না।
প্রকৃতপক্ষে নিজের রাজ্যের স্বার্থে মমতা কোনো ছাড় দিতে রাজি নন। কারণ ২ বছর পর তাকে আবারও পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় টিকে থাকার নির্বাচন বিধানসভা ভোটে জনতার মুখোমুখি হতে হবে। এক্ষেত্রে কেন্দ্রবিরোধী অস্ত্রই অন্যতম বলে মনে করছেন কলকাতার রাজনৈতিক মহল।
২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ঢাকা এলেও শেষ মুহূর্তে মমতা না আসায় তিস্তা চুক্তি আটকে যায়।
তখন মমতার অভিযোগ ছিল, খসড়া চুক্তিপত্রে যে পরিমাণ পানি বাংলাদেশকে দেওয়ার কথা ছিল তা স্বাক্ষর হওয়ার জন্য তৈরি চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে বদলে দেওয়া হয়েছে।
ওই চুক্তি স্বাক্ষর হলে পশ্চিমবঙ্গের কৃষি ও কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলেই মমতা আপত্তি জানিয়ে ঢাকা যাননি।