যেভাবে সাড়ে ৪ কোটি টাকার স্বর্ণ পাচার করছিলেন শহীদ

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর দিয়ে অভিনব কায়দায় স্বর্ণ চোরাচালানকালে মোহাম্মদ শহীদ মিয়া নামের এক যাত্রীকে গ্রেফতার করেছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।

তার কাছ থেকে ৪৪৬২ গ্রাম অপরিশোধিত স্বর্ণ ও ৩০ গ্রাম অলংকার জব্দ করা হয়েছে যার বাজার মূল্য ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

শুক্রবার সকালে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে শারজাহ থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে আসলে আটক হন ওই যাত্রী।

শরীরে পরিহিত ৯টি শর্ট ও একটি ফুল প্যান্ট এবং ৬টি স্যান্ডো গেঞ্জির মধ্যে বিশেষ কৌশলে সোনা চোরাচালান করছিলেন তিনি।

শুক্রবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেলের সহকারী পরিচালক প্রদীপ কুমার সরকার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে গোপন সংবাদ আসে শারজাহ থেকে ঢাকায় আগত ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের (স্কাই আপ) ফ্লাইট নম্বর বিএস ৩৪৬ যোগে শুক্রবার সকাল ৮টা ৪১ মিনিটে এক যাত্রী হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের মাধ্যমে স্বর্ণ চোরাচালানের কাজে সম্পৃক্ত থাকতে পারে।

এ প্রেক্ষিতে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালকের তত্ত্বাবধানে এবং শিফট ইনচার্জের নেতৃত্বে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেল এয়ারপোর্ট এ-শিফট এর কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাৎক্ষণিকভাবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

ইউএস বাংলার বিমানটি অবতরণের সঙ্গে সঙ্গে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে বোর্ডিং গেইট, ট্রানজিট পয়েন্ট, গ্রিন চ্যানেলসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সতর্কতামূলক অবস্থান গ্রহণ করা হয়।

যাত্রী মোহাম্মদ শহীদ মিয়া ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে সকাল সাড়ে ৯ টায় গ্রিন চ্যানেলের স্ক্যানিং মেশিন অতিক্রম করার পর তাকে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর টিম এর সদস্যরা চিহ্নিত করে।

তার কাছে স্বর্ণালংকার/স্বর্ণবার/স্বর্ণজাতীয় কোনো কিছু আছে কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি তার কাছে ১০০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালঙ্কার থাকার কথা স্বীকার করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রকৃতপক্ষে ওই যাত্রীর কাছে ৩০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়। তার কাছে আর কোনো স্বর্ণ থাকার কথা অস্বীকার করায় আর্চওয়ে করানো হয় এবং যাত্রীর পরনে অত্যধিক পরিমাণ জামাকাপড়ের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।

যাত্রীর জামাকাপড়ের ওজন অস্বাভাবিক পরিলক্ষিত হওয়ায় জামাকাপড়গুলো খুলে স্ক্যানিং মেশিনে স্ক্যান করা হয় এবং জামাকাপড়ের মধ্যে বিশেষভাবে লুকায়িত স্বর্ণের ইমেজের অস্তিত্ব পাওয়া গেলে যাত্রীকে কাস্টমস হলে নিয়ে আসা হয়।

পরবর্তীতে স্বর্ণের পরিমাণ নির্ণয়ের লক্ষ্যে যাত্রীর শরীরে পরিহিত ১৬ পিস কাপড় (যার মধ্যে শর্ট প্যান্ট-৯ টি, স্যান্ডো গেঞ্জি-৬ টি ও ফুল প্যান্ট-১টি) স্থানীয় স্বর্ণকার কর্তৃক যাত্রী ও বিমানবন্দরে দায়িত্বরত বিভিন্ন সংস্থার উপস্থিতিতে বিমানবন্দরের ক্যানোপি-১ এ নিয়ে পোড়ানো হয়।

পোড়ানোর পরে অপরিশোধিত ৪ হাজার ৪৬২ গ্রাম পরিমাণ স্বর্ণ নির্ণয় করা হয়। তার কাছ থেকে মোট ৪ হাজার ৪৯২ গ্রাম স্বর্ণ আটক করা হয়।

জব্দকৃত স্বর্ণের আনুমানিক বাজার মূল্য ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ওই যাত্রীকে গ্রেফতার করা হয় এবং বিমানবন্দর থানায় যাত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হয়।

 

 

ফেসবুকে লাইক দিন

Latest Tweets

তারিখ অনুযায়ী খবর

March 2025
F S S M T W T
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031