ইতালিকে ৩-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতল আর্জেন্টিনা

অবশেষে ৩-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়েয়ে ল্যাটিন আমেরিকা ও ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই লা ফিনালিসিমা জিতে মাঠ ছেড়েছে আর্জেন্টিনা।

দুই মহাদেশীয় সেরার লড়াই মুলত একপেশে হয়ে গেছে। ইউরোপসেরা ইতালি আর দক্ষিণ আমেরিকার সেরা আর্জেন্টিনার লড়াইটা লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা একবারে প্রতিরোধ ছাড়াই জিতেছে বলা চলে।

শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রায় পুরোটা সময় ইতালির ওপর একপ্রকার আধিপত্য বিস্তারই করেছে আলবিসেলেস্তেরা। ৩-০ গোলে ইউরোপসেরাদের হারিয়ে জিতে নিয়েছে ফিনালিসিমার আর্তেমিও ফ্রাঞ্চি ট্রফিটাও।

ফিনালিসিমার শুরু থেকেই ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের আশপাশ চলে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা সমর্থকদের দখলে। ৯০ হাজার ধারণক্ষমতাসম্পন্ন স্টেডিয়ামের একটা আসনও ফাঁকা যায়নি। শুরু থেকেই উত্তাপটা টের পাওয়া যাচ্ছিল বৈকি।

ম্যাচেও এর ঝাঁজটা ছিল বেশ। শুরুটা আর্জেন্টিনা করেছিল দুর্দান্ত। বলের দখল নিয়ে প্রতিপক্ষ রক্ষণে আক্রমণের পসরাই সাজিয়ে বসেছিল।

তবে ইতালিও শুরুর নড়বড়ে ভাবটা কাটিয়ে ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দেয় শুরুর দশ মিনিট পেরোতে। প্রথম শট অন টার্গেট, প্রথম বড় সুযোগটাও তৈরি করেছিল দলটিই।

লিওনেল স্ক্যালোনির অধীনে আর্জেন্টিনা আর যাই হোক, রক্ষণে যে বেশ শক্তপোক্ত, তার প্রমাণ মিলেছে গেল কোপা আমেরিকাতেই। তার প্রমাণ ওয়েম্বলিতেও দিলেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ আর ক্রিশ্চিয়ান রোমেরোরা।

এমি মার্টিনেজ একটা দারুণ শট ঠেকালেন শুরুতে, ম্যাচের ২০তম মিনিটে আর্জেন্টিনা রক্ষণকে ফাঁকি দিয়ে তৈরি করা বড় সুযোগটাও শেষ মুহূর্তের ট্যাকলে ঠেকিয়ে দিয়েছেন রোমেরো।

দিনদুয়েক আগে টিওয়াইসি স্পোর্টসকে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারে মেসিও তারিফ করেছিলেন বেশ। গোল হজম না করলেই যে জেতার সুযোগ তৈরি হয়ে যায় বেশ!

মেসি সেই সুযোগটাই নিলেন মিনিট কয়েক পর। ২৮ মিনিটে জিওভানি ডি লরেঞ্জোর কড়া পাহারা এড়িয়ে বাম পাশ থেকে আক্রমণে উঠে বল বাড়ান মাঝে থাকা লাওতারো মার্টিনেজের উদ্দেশ্যে।

সহজ ট্যাপ ইনে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন লাওতারো। তাতেই ১-০ গোলে এগিয়ে গিয়ে ম্যাচের চিত্রটাই বদলে দেয় আর্জেন্টিনা।

এই এক গোলের পর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি লিওনেল মেসিদের। ইতালি এরপর মরিয়া হয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নরা গোল শোধের চেষ্টা করেছে।

আর আর্জেন্টিনা সেসব সামলে প্রতি আক্রমণে উঠে এসেছে। বিরতির ঠিক আগে তেমনই এক প্রতিআক্রমণে দ্বিতীয় গোলের দেখা পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা।

গোলরক্ষক এমিলিয়ানোর বাড়ানো বল প্রতিপক্ষ অর্ধে লাওতারোকে পেয়ে যায়, সঙ্গে ছিলেন কোপা জয়ের নায়ক আনহেল ডি মারিয়া।

লাওতারোর বাড়ানো বলে আলতো চিপে বলটা ইতালির জালে জড়ান ডি মারিয়া। তাতেই ২-০ গোলে এগিয়ে বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।

বিরতির আগে তাও বারদুয়েক আর্জেন্টিনা রক্ষণকে একটু দুশ্চিন্তা উপহার দিতে পেরেছিল ইতালি। দুই গোল খেয়ে বিরতি থেকে ফিরে সেটাও উবে গেল যেন। তাতে খেলাটা হয়ে পড়ল আর্জেন্টিনা আক্রমণ আর ইতালি রক্ষণের।

আরেকটু স্পষ্ট করে বললে মেসি-মার্টিনেজ-ডি মারিয়াদের আক্রমণ আর ইতালিয়ান গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি ডনারুমার। বিরতির পর কম করে হলেও চারটা নিশ্চিত গোলের সুযোগ ঠেকিয়ে দিয়েছেন।

যার মধ্যে দুটো ছিল মেসির। প্রথম গোলের যোগান দিলেও শুরুর ৪৫ মিনিটে মেসি খানিকটা নিশ্চুপই ছিলেন যেন।পাওলো দিবালা বক্সের সামনে থেকে দারুণ এক ফিনিশে ব্যবধানটা আরও বাড়ান। তাতে একপেশে ফাইনালটা আরও একপেশে করে আর্জেন্টিনা ৩-০ ব্যবধানে হারায় ইতালিকে।

১৯৯৩ সালের পর আবারও ফিনালিসিমার আর্তেমিও ফ্রাঞ্চি ট্রফি জয়ের আনন্দে ভাসে আলবিসেলেস্তেরা।

ফেসবুকে লাইক দিন

Latest Tweets

তারিখ অনুযায়ী খবর

June 2023
F S S M T W T
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30