ব্রেকিং নিউজঃ

ব্লক ব্যবহারে কার্যকর উদ্যোগ নেই অবৈধ ইটভাটা ৩২০০

সারা দেশে নির্বিঘ্নে চলছে পরিবেশ বিধ্বংসী ৭ হাজার ৯০২টি ইটভাটার কার্যক্রম। এর মধ্যে ৩ হাজার ২০০ ইটভাটাই অবৈধ।

এসব ভাটায় ইট নির্মাণে বিপুল পরিমাণ ফসলি জমি ও পাহাড়ের মাটি কাটা হচ্ছে।

পাশাপাশি জ্বালানি হিসাবে ব্যবহারে প্রতিবছর নিধন করা হচ্ছে অসংখ্য গাছপালা।

এছাড়া ইট পোড়াতে নিম্নমানের কয়লা ব্যবহার করায় সৃষ্টি হচ্ছে মারাত্মক বায়ুদূষণ।

শুধু তা-ই নয়, কোনো কোনো স্থানে নিয়মবহির্ভূতভাবে আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে এসব ভাটা।

এদিকে পোড়া ইটের বিকল্প হিসাবে পরিবেশবান্ধব ব্লক ব্যবহারে তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই।

বিশেষ করে সরকারি অবকাঠামো নির্মাণে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা বাস্তবায়নে উৎসাহ নেই সংশ্লিষ্টদের।

অথচ ২০২৫ সালের মধ্যে সব ধরনের সরকারি নির্মাণে এই ব্লক ব্যবহারের নির্দেশ রয়েছে।

সেই হিসাবে চলতি বছরের জুনের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার ৩০ শতাংশ বাস্তবায়নের কথা থাকলেও অগ্রগতি এর ধারে-কাছেও নেই।

তবে কর্তৃপক্ষের তেমন তৎপরতা না থাকলেও বেসরকারি পর্যায়ে ব্লক তৈরির জন্য এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০টি কারখানা গড়ে উঠেছে।

এতে ধীরে ধীরে বেসরকারি পর্যায়ে ব্লকের ব্যবহার বাড়ছে। দেশসেরা বেসরকারি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কনকর্ড, সেল ও বিটিআই নির্মাণকাজে ব্লকের ব্যবহার শুরু করেছে।

এছাড়াও দেশের শহরাঞ্চলে ইটের পরিবর্তে মানুষ ব্লক ব্যবহার করে বাড়ি নির্মাণ শুরু করেছে।

দেশে সরকারিভাবে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন প্রকল্প ভাসানচরের সব নির্মাণ কাজে পোড়া ইটের বিকল্প হিসাবে ব্লকের ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা থাকায় এটা সম্ভব হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের ইটভাটাগুলোয় বছরে প্রায় ২ হাজার ৫০০ কোটি ইট প্রস্তুত হয়। এর মধ্যে ১ হাজার ৭০০ কোটি ইট ভবন ও সড়ক উন্নয়নে ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে ৯০০ কোটি ইট ব্যবহৃত হচ্ছে ভবন নির্মাণে এবং সড়কে ব্যবহৃত হচ্ছে অন্তত ৮০০ কোটি ইট।

এছাড়া প্রায় ৮০০ কোটি ইট পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও রপ্তানি করা হয়।

তারা আরও বলছেন, পোড়া ইটের বিকল্প পরিবেশবান্ধব ব্লক নির্মাণ শুরু হয়েছে দেশে। ভবনে পাঁচটি ইটের বিপরীতে ১টি ব্লক যথেষ্ট।

আর সড়কে প্রতিটি ইটের সমান আয়তনের হবে ব্লকগুলো।

সে হিসাবে ভবন নির্মাণে ইটের চাহিদা পূরণে বছরে ১৮০ কোটি ব্লক দরকার। আর সড়কের উন্নয়ন কাজে বছরে প্রায় ৮০০ কোটি ব্লক দরকার। অর্থাৎ বছরে ইটের পরিবর্তে মোট ব্লকের চাহিদা হচ্ছে প্রায় ৯৮০ কোটি।

অথচ এই মুহূর্তে ব্লক তৈরি হচ্ছে প্রায় ২০ কোটি। ২০১৩ সালে পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাবে বলা হয়, সারা দেশে ইটভাটা ছিল ৪ হাজার ৯৫৯টি।

আর ২০১৮ সালে এ প্রতিষ্ঠানটিই জানায়, দেশে ইটভাটার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৯০২টি।

এছাড়া বাংলাদেশ ইট প্রস্তুত মালিক সমিতির তথ্যমতে, দেশের বিদ্যমান ইটভাটাগুলোর মধ্যে অন্তত ৪০ ভাগের কোনো বৈধতা নেই।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ (সংশোধিত) ২০১৮ অনুযায়ী, আবাসিক, সংরক্ষিত ও বাণিজ্যিক এলাকা, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা বা উপজেলা সদর ও কৃষিজমিতে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। ইটভাটা হতে হবে এসব এলাকা থেকে অন্তত এক কিলোমিটার দূরে।

এছাড়া পাহাড়ি এলাকা থেকে আধা কিলোমিটার দূরে ইটভাটা স্থাপনের কথা বলা হয়েছে।

এ আইনে আরও বলা হয়েছে, ইট প্রস্তুতের জন্য এ আইনে সংজ্ঞায়িত (বালি, মাটি বা অন্য কোনো উপকরণ দিয়ে ভাটায় পুড়িয়ে প্রস্তুতকৃত কোনো নির্মাণ সামগ্রী) ইটভাটা ব্যতীত অন্য কোনোরূপ ইটভাটা স্থাপন, পরিচালনা কিংবা চালু করা যাবে না।

এসব ইটভাটা করতে জেলা প্রশাসকের অনুমোদন ছাড়া ইটভাটা করা যাবে না।

তবে ব্লক প্রস্তুতের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের লাইসেন্স নেওয়ার প্রয়োজন নেই।

এ প্রসঙ্গে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার এমপি যুগান্তরকে বলেন, অবৈধ ইটভাটা বন্ধের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

কোভিড-১৯ এর মধ্যে এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ অভিযান পরিচালনা করে ইটভাটা ভেঙে দিয়ে আসার পরও কদিন পর পুনরায় সেসব ইটভাটা পরিচালিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, দেশে ব্যাপক উন্নয়নযজ্ঞ চলছে, সে কারণে ইটভাটাগুলো ভেঙেচুরে দিয়ে আসার পরও তারা পুনরায় সেসব চালু করে ব্যবসা করছেন। হয়তো এ ব্যবসায় লাভ বেশি, এজন্য তারা এমন করছেন।

আর এজন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের যে দায় নেই, সেটা বলব না।

তিনি আরও বলেন, পোড়া ইটের বিকল্প ব্লকের ব্যবহার নিশ্চিত করতে সবাই মিলে কাজ করতে হবে। এজন্য আমি সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাব।

পরিবেশ মন্ত্রণালয় এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে আন্তরিকতার সঙ্গে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করতে প্রস্তুত রয়েছে। জানতে চাইলে গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব মো. শহীদ উল্লাহ খন্দকার যুগান্তরকে বলেন, পোড়া ইটের বিকল্প ব্লক ব্যবহার নিশ্চিতকরণের বড় একটি দায়িত্ব গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের। শুরু থেকে এ মন্ত্রণালয় সেই দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করছে।

এ আইন পাশ হওয়ার পরপর গণপূর্ত অধিদপ্তরের উন্নয়ন কাজে ব্লক ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সেখানে কিছু কিছু ব্যবহার হচ্ছে। তবে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য প্রকৌশল, স্থানীয় সরকার প্রকৌশলসহ অন্যান্য যেসব সরকারি সংস্থা উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তাদের উন্নয়ন কাজের ক্ষেত্রেও এ নির্দেশনা কার্যকর হওয়া উচিত।

এ বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মাধ্যমে আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।

তিনি বলেন, এখানে একটি বিষয় যাচাই-বাছাই করারও দরকার রয়েছে যে, ব্লকের উৎপাদন কত।

উন্নয়ন কাজে চাহিদা কত। ইটের ব্যবহার বন্ধ করে দিলে ব্লকের সরবরাহ সম্ভব কি না।

সার্বিক পর্যালোচনা করে পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।

এ বিষয়ে ‘হল ব্লক বেইজ ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যালায়েন্স’-এর আহ্বায়ক মোহাম্মদ জুবায়ের বলেন, দেশে এখন পর্যন্ত ৮০টি ব্লক ফ্যাক্টরি গড়ে উঠেছে।

আমরা প্রতিটি জেলায় একটি করে ব্লক ফ্যাক্টরি গড়ে তোলার লক্ষ্যে কার্যক্রম চালাচ্ছি। কনকর্ড, বিটিআই ও সেল নির্মাণকাজে ব্লক ব্যবহার শুরু করেছে।

তিনি বলেন, ইটভাটা বন্ধ হলে পরিবেশ বাঁচবে। আর ব্লকের প্রসার ঘটলে কম খরচে মানসম্মত উন্নয়ন করা সম্ভব হবে। সরকার ২০২৫ সালে সরকারি সব উন্নয়ন কাজে শতভাগ ব্লকের ব্যবহার নিশ্চিত করার ঘোষণা দিলেও কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে, সেটা আমরা জানি না।

আমরা নিজেরা নগরীতে বেসরকারি উন্নয়ন কাজে আমাদের উৎপন্ন ব্লক বিক্রি করছি। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ প্রত্যাশা করছি।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ইট প্রস্তুত মালিক সমিতির মহাসচিব মো. আবু বকর বলেন, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ এবং সংশোধিত ২০১৮ অনুযায়ী দেশে ইটভাটা পরিচালনা করা অসম্ভব। একটি অবাস্তব আইন করেছে সরকার।

তিনি বলেন, পরিবেশ সুরক্ষায় সরকারের উদ্যোগ ভালো। তবে বাস্তবসম্মত একটি সময়সীমা দিয়ে ধাপে ধাপে কমিয়ে আনা যেত।

কিন্তু সেটা না করে কঠোর বিধান চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে বর্তমানে দেশের মোট ইটভাটার ৪০ ভাগ অবৈধ হয়ে গেছে।

জানা যায়, ইটভাটার দূষণ থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য সারা দেশে ক্রমান্বয়ে ইটের বিকল্প ব্লক ও ছিদ্রযুক্ত ইট উৎপাদন ও সরকারি ইমারাত নির্মাণকাজে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের মধ্যে বাধ্যতামূলক করার ঘোষণা দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।

২০১৯ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে সরকারি নির্মাণ, মেরামত ও সংস্কার কাজে ইটের ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করার লক্ষ্যে টেন্ডার ডকুমেন্টসে ক্রমবর্ধমান হারে ব্লক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে।

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সরকারি নির্মাণ, মেরামত ও সংস্কার কাজে ইট ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করতে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের টেন্ডার ডকুমেন্টসে ব্লক ব্যবহারের হার ১০ শতাংশ, ২০২০-২১ অর্থবছরে ২০ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩০ শতাংশ, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬০ শতাংশ, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৮০ শতাংশ এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরে শতভাগ নির্ধারণ করা হয়।

এ সিদ্ধান্ত মোতাবেক জুনের মধ্যে সরকারি উন্নয়ন কাজে ৩০ শতাংশ ব্লকের ব্যবহার নিশ্চিত করার কথা।

কিন্তু কত শতাংশ নিশ্চিত হয়েছে। সে বিষয়ে এখনো সঠিক তথ্য দিতে পারছে না সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো।

হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, দেশের ইটভাটাগুলোয় প্রতিবছর ২০ লাখ টন জ্বালানি কাঠ এবং ২০ লাখ টন কয়লা পোড়ানো হয়।

তাদের হিসাবে এ থেকে বছরে গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ হয় প্রায় ৯০ লাখ টন। এ প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা মনে করেন, দেশে পোড়া ইটের কোনো প্রয়োজন নেই।

নদী থেকে ড্রেজিং করে যে বালু ও মাটি উত্তোলন হয়, তা দিয়েই পোড়া ইটের বিকল্প ব্লকের চাহিদা শতভাগ পূরণ করা সম্ভব।

এ প্রসঙ্গে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্সের নির্বাহী পরিচলক মোহাম্মদ আবু সাদেক বলেন, পোড়া ইট পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এজন্য সরকার পোড়া ইটের বিকল্প হিসাবে ব্লকের ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এ বিষয়ে আইনও পাশ হয়েছে। এ আইন মোতাবেক ২০২৫ সালে সরকারি সব কাজে পোড়া ইটের পরিবর্তে ব্লক ব্যবহার করার কথা।

সে মোতাবেক আগামী জুনের মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানে ৩০ শতাংশ ব্লক ব্যবহার করার কথা। কিন্তু এখন পর্যন্ত কত শতাংশ ব্যবহার হচ্ছে, সেই বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্মাণকাজে ইটের পাশাপাশি ব্লকের ব্যবহারের বিষয় যুক্ত করা হয়েছে।

তবে শ্রমিকদের অদক্ষতা ও ব্লকের স্বল্পতার কারণে এটার ব্যবহার নিশ্চিত করা হচ্ছে না। এছাড়া ব্লক ব্যবহারে শ্রমিকদের দক্ষতা ও ব্লকের উৎপাদনও নিশ্চিত করতে হবে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে সরকারি সব উন্নয়ন কাজে পোড়া ইটের বিকল্প হিসাবে ব্লকের ব্যবহার নিশ্চিত করার নির্দেশনা রয়েছে সরকারের।

সে লক্ষ্যে গণপূর্ত অধিদপ্তরের উন্নয়ন কাজের জন্য ব্লকের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সরকারের অন্যান্য সংস্থার উন্নয়ন কাজের ক্ষেত্রেও ব্লকের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্স ইনস্টিটিউশনকে মনিটরিংয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এ প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী না করার কারণে সেই উদ্দেশ্য পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, পোড়া ইটের কারণে পানি, বাতাস ও ভূমি দূষিত হয়। ব্লকের ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে এ ক্ষতি থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব হবে।

পোড়া ইটের চেয়ে ব্লকের ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে নির্মাণ সামগ্রী হালকা হবে এবং খরচ অন্তত ২০ শতাংশ কমবে।

এ বিষয়ে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, পোড়া ইট বন্ধে সরকারের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।

এখন বিকল্প হিসেবে ব্লকের ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। এর ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে একদিকে নির্মাণের ওজন কমবে এবং খরচও অন্তত ২০ শতাংশ কমবে।

এটা বাধ্যতামূলক করার আগে ব্লকের চাহিদা মোতাবেক উৎপাদন এবং বহুমুখী ব্যবহারের উপযোগী করতে হবে।

এর আগে ইটের ব্যবহার বন্ধ করলে উন্নয়ন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে। তিনি আরও বলেন, ভারত থেকে অতিরিক্ত সালফারযুক্ত কয়লা আমদানি করে ইটভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছে।

এই সালফার মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। অথচ এ ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

সরেজমিন ইটভাটা : সরেজমিন ঘুরে কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের অভিযান এবং মহামারি করোনার কারণে বিরূপ পরিস্থিতিতে অনেক ইটভাটার মালিক ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন।

অনেকে আবার ইটভাটা বন্ধ রেখেছেন। তবে কেউ কেউ এখনো ইটভাটা বন্ধ করার পর নতুন করে চালু করেছেন। কেউ জায়গা পরিবর্তন করে অন্যত্র চালু করেছেন।

সরেজমিন আরও দেখা যায়, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পানগাঁও, জাজিরা, পূর্ব জাজিরা, নতুন বাক্তারচর ও বাঘৈর এলাকায় বেশির ভাগ ইটভাটার অবস্থান রয়েছে। সরকারি বিধিনিষেধের কারণে ওই এলাকার ইটভাটা দিন দিন কমছে।

কোন্ডা ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, এ ইউনিয়নের মোল্লারহাট, জাজিরা, পূর্ব জাজিরা, নতুন বক্তারচর এলাকায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য ইটভাটার চিমনি।

বেশির ভাগ চিমনি দিয়ে কোনো ধোঁয়া বের হয় না। মানে ওইসব ইটভাটায় ইট পোড়ানো বন্ধ রয়েছে। তবে কিছু ইটভাটার চিমনি দিয়ে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। এসব ভাটায় ইট পোড়ানো হচ্ছে।

সাভার প্রতিনিধি জানান, সাভারে ৫৩৭টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে ২৬৬টি অবৈধ। প্রশাসনের নাকের ডগায় দিব্যি কার্যক্রম চালালেও এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেই। সাভার ও আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ইটভাটাগুলোয় কয়লার পাশাপাশি পোড়ানো হচ্ছে কাঠ, প্লাস্টিক ও টায়ার। ভাটার শ্রমিকরা জানান, এসব ভাটায় কাঠ ব্যবহার হয় খুব কম। কয়লা দিয়ে ইট বেশি পোড়ানো হয়।

রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় স্কুল, বসতভিটা ও ঘন আমবাগানের পাশে ইটভাটা পরিচালনা করা হচ্ছে।

এতে পরিবেশ-প্রতিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কর্তৃপক্ষ নির্বিকার রয়েছেন।

পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে রাজশাহী বিভাগে ১ হাজারের বেশি ইটভাটা থাকলেও মাত্র ১০ শতাংশের অনুমোদন রয়েছে। বাকিরা অবৈধভাবে দেদার ইটভাটা পরিচালনা করছেন।

ফেসবুকে লাইক দিন

Latest Tweets

তারিখ অনুযায়ী খবর

May 2024
F S S M T W T
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31