বিশ্বে আধিপত্য বিস্তারে চীনের তুরুপের তাস ইউরোপ
চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি) বিশ্বজুড়ে আধিপত্য বিস্তারে নানা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে ইউরোপ তাদের তরুপের তাস। কারণ একটি বাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে সিসিপির এ উত্থানকে স্বাগত জানিয়েছে ইউরোপ। এমনটা মনে করছেন লেখক ক্লাইভ হ্যামিলটন ও মেরিকে ওলবার্গ। সম্প্রতি তাদের নতুন বই ‘হাইড হ্যান্ড : এক্সপোজিং হাউ দ্য চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টি ইজ রিশেপিং দ্য ওয়ার্ল্ড’-এ এমন মতামত দিয়েছেন তারা।
সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও চীনের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি হয়েছে। ৭ বছর ধরে আলোচনার পর সমঝোতায় পৌঁছে তারা। এ চুক্তির ফলে ইউরোপে চীন যেমন একাধিক ক্ষেত্রে বাণিজ্য বাড়াতে পারবে, তেমন চীনেও ইউরোপের বিভিন্ন কোম্পানি বাজার তৈরির সুযোগ পাবে। তবে অর্থনীতিবিদদের মতে, শেষ পর্যন্ত এ চুক্তিতে জিতেছে চীনই। কারণ, ইউরোপে আরও বেশি বাণিজ্যের সুযোগ পাবেন তারা।
ক্লাইভ হ্যামিলটন ও মেরিকে অলবার্গ লিখেছেন, দীর্ঘদিন ধরে চীনকে যুক্তরাষ্ট্রের জুনিয়র অংশীদার হিসাবেই দেখা হতো। কিন্তু ইউরোপে তাদের সাম্প্রতিক বিজয়ের ফলে চীন বিশ্বকে বোঝাতে পেরেছে যে, চীন হলো বহুপাক্ষিকতায় চ্যাম্পিয়ন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যবাদ ও একতরফাবাদের পক্ষে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পাল্টা শক্তি।
হ্যামিলটন ও ওলবার্গ ইউরোপে চীনের বহু প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং সংস্থার বিবরণ দিয়েছেন, যারা সেখানে সিসিপি তথা চীনা প্রভাব বিস্তারে কাজ করছে। এরমধ্যে যুক্তরাজ্যে ‘৪৮ গ্রুপ ক্লাব’, ফ্রান্সে ক্যাথে ক্যাপিটাল, সাবেক চ্যান্সেলর হেলমট শ্মিট ও গারহার্ড শ্রয়েদার, জার্মান রাষ্ট্রদূত মাইকেল শ্যাফার, মার্কেটর ইনস্টিটিউট এবং ইতালির মুভিসোলসহ অনেক ব্যক্তি ও সংস্থা রয়েছে, যারা চীনা বিনিয়োগে সহযোগিতা করছে।
কূটনীতিবিদদের মতে, চুক্তিটি যতটা না আর্থিক, তার চেয়ে অনেক বেশি রাজনৈতিক। ট্রাম্পের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। জো বাইডেনের আমলে আমেরিকা যাতে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করে, তার ভূমিকাও তৈরি হয়েছে এ চুক্তির মাধ্যমে। কারণ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্রের ওপরও প্রভাব ফেলবে।