অবশেষে তালেবান নেতার সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে বাধ্য হলো আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মাইক পম্পেও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সরাসরি তালেবানের উপপ্রধান মোল্লা আব্দুল গনি বারাদারের সঙ্গে কথা বলেছেন। কাতারে তালেবানের রাজনৈতিক দপ্তরের মুখপাত্র সোহেল শাহিন এ খবর নিশ্চিত করে এক টুইটার বার্তায় বলেছেন, বারাদার ও পম্পেও আফগানের আশরাফ ঘানি সরকারের সঙ্গে তালেবানের আলোচনা ও বন্দিমুক্তিসহ আফগানিস্তানের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করেন।
এমন সময় এ কথোপকথন অনুষ্ঠিত হলো যখন আমেরিকার মদদপুষ্ট ঘানি সরকারের সঙ্গে তালেবানের আলোচনার কোনো তারিখ নির্ধারিত হয়নি। তালেবান সম্ভাব্য এ আলোচনার পূর্বশর্ত হিসেবে আফগানিস্তানের কারাগারগুলোতে আটক তাদের সব বন্দিকে মুক্তি দিতে বলেছে।
এর আগে শান্তিচুক্তি মোতাবেক এক হাজার সৈন্যকে মুক্তি দিয়ে শান্তি স্থাপনের নজির রেখেছে তালেবান। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি কাতারে তালেবানের সাথে আমেরিকার ঐতিহাসিক স্বাক্ষরিত চুক্তিতে বলা হয়েছে, আন্তঃআফগান শান্তি আলোচনা শুরু করার আগে কাবুল সরকার তালেবানের পাঁচ হাজার বন্দিকে এবং তালেবান এক হাজার আফগান সৈন্যকে মুক্তি দেবে।
এখন পর্যন্ত আফগান সরকার ৪,৬০০ তালেবান বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। কিন্তু বাকি ৪০০ বন্দিকে মুক্তি দিতে অস্বীকৃতির তালবাহনা করে ঘানি সরকার দাবি করছে, এসব বন্দির বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর সব অপরাধের অভিযোগ থাকায় তাদেরকে মুক্তি দেয়া সম্ভব নয়।
আফগান-আফগান আলোচনা শুরুর ক্ষেত্রে এখন এই বিষয়টি একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে কাজ করছে। এবং তালেবান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, বন্দিদের মুক্তি ছাড়া আন্তঃআফগান আলোচনায় তারা বসছেনা। আফগানিস্তানের গোত্র প্রধানদের নিয়ে গঠিত পরিষদ লয়া জিরগা এই ৪০০ তালেবান বন্দির ব্যাপারে আলোচনা করার জন্য আগামী শুক্রবার বৈঠকে বসবে বলে কথা রয়েছে।
তালেবানকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে ২০০১ সালের শেষের দিকে আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালিয়েছিল আমেরিকা। কিন্তু প্রায় দুই দশকেও তালেবানকে ধ্বংস করতে না পেরে এখন আফগানিস্তান থেকে চলে যাওয়ার জন্য খোদ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো একজন শীর্ষস্থানীয় মার্কিন কর্মকর্তা সেই তালেবানের সঙ্গে প্রকাশ্যে আলোচনা করতে বাধ্য হচ্ছেন।